বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

এখনও চলছে বিএনপির নীরব চাঁদাবাজি

এখনও চলছে বিএনপির নীরব চাঁদাবাজি
ছবি - সংগৃহীত
ঢাকা ইনসাইডার

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তীব্র গণ আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ৫ আগস্ট থেকেই গা ঢাকা দেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে খুবই অল্প সংখ্যক সম্প্রতি যার যার এলাকায় ফিরলেও অধিকাংশ নেতাকর্মী এখনও দেখা দেননি।

তীব্র গণ আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ৫ আগস্ট থেকেই গা ঢাকা দেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে খুবই অল্প সংখ্যক সম্প্রতি যার যার এলাকায় ফিরলেও অধিকাংশ নেতাকর্মী এখনও দেখা দেননি।

সেই সুযোগে রাজনীতির মাঠে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনিপির নেতা কর্মীরা। বাজার দখল, পরিবহন ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন সরকারী অফিসে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি মানুষের বাসাবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি করছেন বিএনপি এবং এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামীলীগ সরকার পতনের ৫০ দিন পার হলেও শেষ হয়নি তাদের চাঁদাবাজির পর্ব। যার জন্য এখনও স্বস্তি ফিরে আসেনি সাধারণ মানুষের জীবনে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মালিকানায় থাকা কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই চাঁদা দেওয়া ছাড়া খুলতে পারেনি কেউ। পাশাপাশি কোন দল না করা সাধারণ ব্যবসায়ীদেরও দিতে হচ্ছে চাঁদা।

কোন কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একাধিক গ্রুপ চাঁদা নিয়ে এসেছে। একপক্ষ চাঁদা নিয়ে গেছে এমনটা শোনার পরও ছাড় পায়নি তারা। দ্বিতীয় দফায় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় হামলার শিকার হয়েছে অনেকেই।

আবাসিক বহুতল ভবন জ্বালিয়ে দেওয়া থেকে বাঁচতে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীদেরকে চাঁদা দেওয়া বেশ কয়েকজন আমাদের সাথে কথা বলেছেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেকেই নাম গোপন রাখতে অনুরোধ করেন।

তেমনই একজন বলেন," উপশহরে আমার ছোট একটি মনিহারী দোকান। ৫ আগস্টের পর ২০দিন খুলতে পারিনি। তারপর ৫০ হাজারের রফা হয়। তারা চেয়েছিল দেড় লাখ। টাকা দেওয়ার পর আমি দোকান চালাচ্ছি।"

তিনি বলেন, বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের নেতা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সবাই চাঁদাবাজি করেছে। আর বড় ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজী করেছে বড় নেতারা (জেলা পর্যায়ের নেতারা)। এই বাজারের বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী এখনও বাজারে আসতে পারেনি। হয়ত সমঝোতা হয়নি।

ময়মনসিংহে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা তার পেনশনের টাকা দিয়ে শহরে একটি দ্বিতল বাড়ি করেছেন। বাড়ি ভাড়া দিয়েই চলেন তিনি। ৬ আগস্ট তার বাসায় যায় একদল যুবক, তাকে ভয়ভীতি দেখায়। তারপর বাসায় কেউ যেন হামলা না করে সে বিষয়টি তারা দেখবে মর্মে হাত খরচ চায়। বাড়ির মালিক ৩০ হাজারে তাদের বিদায় করতে পারেন।

রনি নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন কর্মীর কাছে তারই এলাকার যুবদলের এক নেতা মামলায় থাকা নাম কেটে দিবে বলে টাকা চায় ৫০ হাজার। থানায় অভিযোগের একটি প্রিন্টেড কপিও দেখায় সে। সেখানে ৪৭ নাম্বারে ছিল রনির নাম। অথচ পরে খোঁজ নিয়ে রনি জানতে পারে এ ধরণের কোন অভিযোগই থানায় জমা হয়নি।

সম্প্রতি ঢাকার অদূরে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় একখন্ড জমিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পারিবারিক একটি বিরোধ মিটিয়ে দিতে দুই পক্ষকেই ডাকেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। এক পর্যায়ে তিনি জমিটি কিনে নিতে চান। তারা রাজী নাহলে মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিএনিপির সেই নেতা সেখান থেকে চলে যান। কিন্তু পরে ঝামেলা আরও বাড়তে পারে এ চিন্তা করে তারা কোথাও অভিযোগ করেননি।

তবে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন বিএনপির হাই কমান্ড। তারা কড়া নির্দেশনাও দিয়েছেন তৃণমূলের নেতা কর্মীদেরকে যেন কেউ অপকর্মে যুক্ত না হয়।