শামীম মোল্লা হত্যার মাস্টারমাইন্ড সমন্বয়ক ও ছাত্রদল নেতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেটে কারও জন্য অপেক্ষায় ছিলেন শামীম; হঠাৎ পেছন থেকে তিনজন এসে তাকে জাপটে ধরে মারধর শুরু করেন। এরপর আরও কয়েক দফা বেধড়ক মারধরের পর তাকে দেওয়া হয় পুলিশে। পরবর্তীতে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেটে কারও জন্য অপেক্ষায় ছিলেন শামীম; হঠাৎ পেছন থেকে তিনজন এসে তাকে জাপটে ধরে মারধর শুরু করেন। এরপর আরও কয়েক দফা বেধড়ক মারধরের পর তাকে দেওয়া হয় পুলিশে। পরবর্তীতে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন শামীম মোল্লা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের ৩৯-তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ ছাত্রকে মারধরের ঘটনার সূত্রপাত বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হলেও রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় প্রক্টরিয়াল বডি। এরপর পুলিশ শামীমকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তাকে পেটানো হয়। যদিও তাকে কয়েক দফা মারধর করলেও সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার কথা তিনি ‘স্বীকার’ করেননি।
শামীমের মৃত্যুর পর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তারা।
ঘটনার বর্ণনায় দুজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন বলেন, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটে মহাসড়কের পাশে এক স্বজনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শামীম। দেখতে পেয়ে তিন শিক্ষার্থী তাকে ধরতে যান। একজন তাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে ফেলেন। সেখানে এক দফা তাকে মারধর করা হয়। এই তিন শিক্ষার্থী হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক আহসান লাবীব ও আতিকুজ্জামান আতিক (ভিডিও’তে তাদের দেখা গেছে)। শামীমকে ধরতে এই দুজনকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁইয়া।
এরপর জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেইটের ভেতরে যেখানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে কাপড় বিক্রি হয়, সেখানে নিয়ে শামীমকে আরেক দফা মারধর করা হয়। এরপর আবার তাকে জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেইটে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে তুলে দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও ‘প্রধান’ সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ও অপর সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের নির্দেশে দ্বিতীয় দফায় তাকে আবারও মারধর করে আহসান লাবীব, আতিকুজ্জামান আতিক।
সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করলেও কাউকে ঠেকাতে দেখা যায়নি। এরপর তারা শামীমকে প্রক্টর অফিসের পাশের একটি কক্ষে রাখেন। সেখানেও তাকে আরও মারধর করা হয়।
এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতের নির্দেশে জাবি ছাত্রদল কর্মী ও ৪২ ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আল মাহমুদ গেটের তালা ভাঙ্গে। পরে জাবি ছাত্রদল কর্মী ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ ব্যাচের রাজু আহমেদ ৪৬ ব্যাচের রাজন হাসান, জাবি ছাত্রদল কর্মী ও সিএসই বিভাগের (৪৭) এম এন সোহাগ মারধর করে।
এরপর চতুর্থ দফায় হামিদুল্লাহ সালমান ইংরেজি(৪৯), ৫২ ব্যাচের দুই ছাত্রদল কর্মী সাইফুল ও ফামের্সি বিভাগের মিনার মারধর করে। সালমান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা হলেও তার পিতা আব্দুর রহিম পাটোয়ারী চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমীর।
জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রদলের একাধিক গ্রুপ রয়েছে, এরমধ্যে শিবিরপন্থী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতের গ্রুপটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও ‘প্রধান’ সমন্বয়ক আরিফ সোহেলও শিবিরের আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতিতে জড়িত বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী জানান, খবর শুনে পুলিশ আগেই এসেছিল, তবে প্রক্টর অফিসের ওই কক্ষে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে শামীমকে পুলিশে হস্তান্তর করা হলে তাকে গাড়িতে তোলে পুলিশ।”
এসময় পুলিশের গাড়িতে উঠানোর সময় পঞ্চম দফায় মারতে উস্কানি দিয়ে সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলতে থাকেন(ভিডিওতে ধরা পড়েছে) ‘ওকে ধর, মার, মার’। এসময় মারতে উস্কানি দেন অপর সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান।
যদিও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রশিদুল আলমও বলছেন, শামীম ‘হেঁটে-হেঁটেই’ পুলিশের গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু এরপর তার মৃত্যুর বিষয়টি 'অস্বাভাবিক' হিসেবে দেখছেন প্রক্টর।
তবে পুলিশ বলছে, তাকে উদ্ধারের পরপরই তারা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু চিকিৎসক শামীমকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রক্টর রশিদুল আলম বলেন , “১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে শিক্ষার্থীরা আটকের পর মারধর করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেওয়া হয়। আমরা আশুলিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম আসে।”
“তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পুলিশে হস্তান্তরের সময়ও মনে হয়নি তিনি ‘আশংকাজনক’।
তবে ঢাকা জেলা পুলিশের এসপি আহম্মদ মুইদ বলেন, “আমরা তাকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
আশুলিয়া থানা পুলিশ শামীমকে পাঠিয়েছিল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে।
এ হাসপাতালের চিকিৎসক সেলিমুজ্জামান সুজন বলেন, “রাত সোয়া ৯টার দিকে শামীমকে নিয়ে আসার পর আমরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত অবস্থায় পাই। দেখে মনে হয়েছে হাসপাতালে আনার কিছু আগেই ওনার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
শামীম আহমেদকে মারধরের বেশকিছু ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেইট) মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবিব। যদিও পরবর্তীতে এক ফেসবুক পোস্টে লাবিব উল্লেখ করেন যে, সে এই হামলার সাথে জড়িত না। সে শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা অফিসারদের হাতে তুলে দেয়। তবে ভিডিওতে সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে লাবিব আঘাত করছে। এসময় অপর একজনকে মাটিতে পরে থাকা শামীমকে লাথি দিতে দেখা যায়। তবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এ বিষয়ে লাবিব আহসান ঘটনাস্থলে থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, শামীম মোল্লাকে আটক করার পর অনেকে আমাকে ফোন দেয়। আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি সে ১৫ তারিখের হামলায় ছিল কিনা। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করা হলে আমি ইবনে সিনা হাসপাতালে যাই এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসি।
পরবর্তীতে শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় নাম চলে আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবিবকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবির সমন্বয়ক আরিফ সোহেল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
তবে সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের বিরুদ্ধে সমন্বয়ক আহসান লাবিবকে ফাঁসাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছে শিবিরপন্থী সাবেক ছাত্রদের একটি অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ‘আমরাই জাহাঙ্গীরনগর’-এ আহসান লাবিবের পক্ষে তারা জনমত গঠনের চেষ্টা করছে বলে জানা যায়।
অন্য আরেক ভিডিও থেকে দেখা যায়, সন্ধ্যায় নিরাপত্তা শাখায় আটক অবস্থায় একজন লাঠি দিয়ে শামীম মোল্লাকে সজোরে আঘাত করছেন। মারধরকারী ওই ব্যক্তি রাজু আহমেদ। রাজু আহমেদ সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, এই মারধরের নেতৃত্ব দেন জাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম সৈকত। প্রক্টর অফিসের সামনে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু হাসান রাজন ও ইংরেজি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদু্ল্লাহ সালমানকে মারধর করতে দেখা যায়। তারা উভয়ে ছাত্রদলের কর্মী। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জানান, প্রক্টর অফিসের ভেতরে ঢুকে আমি প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার রুমের দরজা খুলতে যাই কারণ আমার ধারণা ছিল তাকে সেফটি দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি যা দেখি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় ফ্লোরে উপুড় হয়ে পড়ে আছে, বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে শামীম মোল্লা। শামীম মোল্লাকে কারা মারলো? কেন মারলো? প্রান্তিক গেটে বিকেল থেকে শুরু করে রাত ৯ টা পর্যন্ত ৫-৬ দফায় তাকে কেন মারার সুযোগ দেয়া হলো, নিরাপত্তা অফিসে পিটিয়ে মেরে ফেলার মত অ্যাকসেস কিভাবে পাওয়া গেল? যেখানে খোদ বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অংশ সমন্বয়ক এবং অনাগত ক্ষমতাসীনদের অংশ ছাত্রদল এর সরাসরি ইনভলভমেন্ট আছে সেখানে কি আদৌ বিচার হবে? আমি জানিনা এবং মনে মনে বিশ্বাস করি, হবেনা। এটাকে মব লিঞ্চিং বলে লঘু করে, শামীম মোল্লার প্রিভিয়াস রেকর্ডস সামনে এনে একটা অর্ধমৃত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলা জাস্টিফাই করে ফেলা হবে বলে আমার বিশ্বাস।
মারধরের সাথে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যুক্ত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, "মারধরকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় আমার জানা নেই। তবে আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। ফুটেজ থেকে আমরা জড়িতদের খুঁজে বের করব।"
মাস্টারমাইন্ড’রা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে
ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হানকে (২০) গত রোববার ভোরে গাজীপুরের রাজেন্দ্রনগর এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শামীম হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান রায়হান ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
কিন্তু অপর সমন্বয়করা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও ‘প্রধান’ সমন্বয়ক আরিফ সোহেল জড়িত থাকায়। তিনি প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মাদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আব্দুল্লাহ’র ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। তার নাম হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় তিনি ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে কারা কারা অনলাইনে প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে’ চিহ্নিত করবেন বলেও হুশিয়ারী দিয়েছেন।
একইসাথে ভিডিও ফুটেজে উল্লেখ থাকার পরেও মামলা হয়নি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জাবি শাখার সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁইয়া ও আব্দুর রহিম সৈকতের বিরুদ্ধে।
বরং হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় তাদের নামে বিচার চাওয়ার ‘অজ্ঞাতনামা’ সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করতে জুবায়ের আল মাহমুদকে দিয়ে একটি জিডি করিয়েছেন তারা।